

চতুর্ধা মূর্তির ব্রহ্ম পরিবর্তন
শ্রী মন্দির পালটাবে মহাশ্মশান , দেবী কাঁদবেন মন্দিরে , মন্দিরের মধ্যে ভৈরবী বিচরণ করবেন । কাল অর্থাৎ ১৫.০৬.২০১৫ তারিখ রাতে । শুনতে আশ্চর্য লাগলেও নব-কলেবরের আগে ব্রহ্ম পরিবর্তনের দিন রাতে কিছু অলৌকিক ঘটনা ঘটে পুরীর শ্রী জগন্নাথ মন্দিরে।
ব্রহ্ম পরিবর্তন পরম ব্রহ্মর পরম লীলা । আত্মার সঙ্গে পরমাত্মার মিলন। এ এক ঈশ্বরীয় মুহূর্ত । “যে পরম ব্রহ্মকে ইন্দ্র , চন্দ্র ,ও কুবের আদি পাওয়ার জন্য মাথা খোঁড়েন তিনি স্বয়ং জগন্নাথ প্রভু ছার মনুষ্যকে দর্শন দেন এবং দেবেন । এর থেকে ভাগ্যবান মুহূর্ত আর মানুষের জন্মে কি আছে?” কথাটা উল্লেখ করে জগন্নাথের মুখ্য বাড়-গ্রাহী জগন্নাথ স্বাইঁ মহাপাত্র (জগুনি) , চোখ ছল ছল করে...অশ্রু ধারা ঝরিয়ে...ভক্তি গদ গদ হয়ে বলেন। আর মাত্র এক দিন পর শ্রী মন্দিরে শ্রী জগন্নাথ মহাপ্রভুর ব্রহ্ম বা ঘট পরিবর্তন করবেন তিনি । এ কথা ভাবার সময় তাঁর মনে শ্রদ্ধ্যা ও ভক্তিভাব আপনা হতে চলে আসছে এবং দুই নেত্র-থেকে ভক্তির অশ্রু ধারা বয়ে চলেছে।
এইখানেই ভক্তের সঙ্গে ভগবানের মিলন ।
নব-কলেবর সম্বন্ধে কিছু তথ্য:-
যে বছর জোড়া আষাঢ় পড়ে সেই বছরটি শ্রী জগন্নাথ , বলভদ্র ও মা সুভদ্রার নব-কলেবর হয় । সাধারণত জোড়া আষাঢ় ৮, ১২ ,১৬ কিম্বা ১৯ বছর পর পড়ে । এবারে ১৯ বছর পর তিন ঠাকুরের নব-কলেবর যাত্রা সম্পন্ন হবে। বিংশ শতাব্দীর নব-কলেবর যাত্রা প্রথমে ১৯১২ ,১৯৩১ ,১৯৫০ , ১৯৬৯ , ১৯৭৭ এবং ১৯৯৬ সালে হয়েছিল। এই বছর অর্থাৎ ২০১৫ সালে নব-কলেবর যাত্রা ১৯ বছর বাদে পড়েছে । নব-কলেবর
অতিতে শ্রী জগন্নাথের ১৯৯৬ সালের নব-কলেবরে ,‘জগুনি’ দইতাপতি ভাবে কার্য্য সম্পাদন করেছেন। তাই তাঁর কিছু অভিজ্ঞতা আছে ওই বিষয়। তিনি বলেন ১৫ তারিখ সকালে কিছু না খেয়ে শুধু পানিয় হিসেবে সর্বত পান করে মন্দিরে প্রবেশ করবেন। ওই দিন মন্দিরের ভেতরে কোন সেবায়ত বা অন্য কোন মানুষ থাকবেন না । রাত ৮ টার মধ্যে মন্দির শোধন হবে এবং সমস্ত দ্বার বন্দ করে দেওয়া হবে । মন্দির প্রশাসন সমস্ত পার্শ্ব দেব দেবীর মন্দির এবং মুখ্য মন্দিরে তালা ঝুলিয়ে তালার চাবি দইতাপতি সেবায়তকে হস্তান্তর করে চলে আসবেন।
বিলম্বিত রাত্রে পুরী মন্দির এবং সমস্ত পুরী সহরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে সম্পূর্ণ অন্ধকার করে দেওয়া হবে। মন্দির পরিসরে ছামু দুহুড়ি বা প্রদীপের আলো প্রজ্বলিত হবে । এরপর নতুন বিগ্রহকে পহন্ডি করে অণসর ঘরে (জগন্নাথের স্নান যাত্রার পর তিন ঠাকুরের জ্বর হয় তাই ওই ঘরে অধিষ্ঠান করেন) আনা হয়। মন্দিরে কেবল মাত্র চার জন বাড়-গ্রাহী ও দইতাপতি সেবায়ত থাকবেন। তারপর রুদ্ধ গৃহের মধ্যে ব্রহ্ম পরিবর্তন কার্য্য আরম্ভ হবে। এইসময় একটি মাত্র দীপ জ্বলবে । হাতে পাট বস্ত্র দিয়ে সম্পূর্ণ হাতের চেটো মুড়ে দুচোখ বাঁধা থাকে ওই অবস্থায় ব্রহ্ম পরিবর্তন হয় । এই কার্য্য শেষ হওয়ার পর বাড়-গ্রাহীরা বাইরে অপেক্ষারত কিছু দইতাপতিদের ভেতরে প্রবেশের আমন্ত্রণ জানান । এরপর কেবল মাত্র ওরা নতুন বস্ত্র পরিধান করে নতুন বিগ্রহকে দর্শন করেন সুবর্ণ মোহর, রুপোর টাকা ইত্যাদি সমর্পণ করে নতুন ঠাকুরের দর্শন করেন। প্রভুর কাছে ভাব ভক্তিটাই আসল।
এরপর পুরন বিগ্রহকে কৈলি বৈকুণ্ঠে পাতালি করন করা হয় । ব্রহ্ম পরিবর্তনের সময় কোন বাধা বিঘ্ন না হওয়ার জন্য দেউল করণ সেবায়তরা বড় বড় তরওয়াল নিয়ে সিংহ দ্বারে এবং পতিত পাবন মূর্তির কাছে ঘোরা ঘুরি করেন । এটা আদিম যুগ থেকে প্রচলিত।
পাতালি কার্য্য শেষ হওয়ার পর দইতাপতি ভাইরা মুক্তিমন্ডপের কাছে তিল তেল মেখে দক্ষিণ দ্বারদিয়ে মার্কণ্ড পুষ্করিণীতে যান এবং ওই পুষ্করিণীতে স্নান সেরে পুরনো বস্ত্র ত্যাগ করে আবার নতুন বস্ত্র পরিধান করেন। হলুদের জলে পা ধুয়ে নির্মাল্য সেবা করে স্বগৃহে প্রত্যাবর্তন করেন ।
বিগত ২০০ বছর ধরে বিভিন্ন জগন্নাথ সংস্কৃতির গবেষকরা নির্দিষ্ট কোন তথ্য দিতে পারেন নি। কেউ কেউ একে গৌতম বুদ্ধের দাঁত , জীবন্ত শালগ্রাম শিলা , সুবর্ণ শ্রী যন্ত্র , সুবর্ণ নারায়ণ মূর্ত্তি , শ্রী কৃষ্ণের অদগ্ধ পিণ্ড ইত্যাদি বলে বর্ণনা করেছেন । কিন্তু কারুর মত ই গ্রহণিয় হয়নি প্রমাণের অভাবে । ব্রহ্ম পরিবর্তন যিনি করেন তার পর তিনি স্বল্পায়ু হয়ে ইহ-ধাম ত্যাগ করেন। এটাই চিরা চরিত হয়ে এসেছে। তাই বয়োজ্যেষ্ঠ দইতাপতিকেই এই গুরু দায়িত্ব দেওয়া হয়।
ব্রহ্ম পরিবর্তনের দিন সারা শ্রীক্ষেত্র শ্মশানের মতন অনুভব হয়। অনেক অনুভূতির উল্লেখ আছে তবে সেগুলো আলোচনার পর্যায়ে না আনাই শ্রেয় ।
অনুবাদ: ত্রিভুবন জিৎ মুখার্জী / ১৪.০৬.২০১৫ / বেলা ৩.৩৮
The Star Group to provide its services to Indian-run casino operator The
উত্তরমুছুনThe 보령 출장안마 Star Group has 전라남도 출장마사지 announced the launch of a new 광명 출장안마 gaming operator The 문경 출장샵 Star Group. The enterprise, which is run by the 진주 출장마사지